চট্টবাণী: নগরে গ্যাস সংকটের প্রভাব পড়েছে গণপরিবহনে। গত দুইদিন ধরে চলছে না গ্যাসনির্ভর কোনো যানবাহন।এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। পাশাপশি বাড়তি ভাড়ায় পৌঁছাতে হচ্ছে গন্তব্যে।
মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রামে। ফলে পাম্পগুলোতে গ্যাস না পাওয়ায় সড়কে গ্যাসনির্ভর যানবাহন কমে যায়।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শনিবার রাতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় সড়ককে গণপরিবহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনও গ্যাস নির্ভর যানবাহনগুলোতে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে যেতে মাত্র দুই দিন আগেও যেখানে লাগত ন্যুনতম ৫ টাকা, সেখানে যাত্রীদের এখন গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। তাছাড়া, বেশি দূরত্বের যানবাহনগুলোতেও আনুপাতিক হারে বাড়ানো হয়েছে ভাড়া। বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীর সঙ্গে চালক ও হেলপারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যায় অনেককে।
নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম উদ্দীন জানান, গত দুই দিন যানবাহনের সংকট ছিল। আজ একটু কমেছে। তবে গ্যাসনির্ভর যানবাহনগুলিতে ভাড়া এখনও বেশি। ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা নিচ্ছে। আবার যেখানে ১০ টাকার ভাড়া সেখানে ১৫ টাকা নিচ্ছে।
খুলশী এলাকার বাসিন্দা তৌফিকুল আলম বলেন, বাসায় খাবারের সংকট, রাস্তায় গাড়ি সংকট। সাধারণ মানুষ যাবে কই। একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো চট্টগ্রামে এ অবস্থা হওয়ার কথা নয়। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকবে না, তা হতে পারে না। এত বড় একটা শহরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকা রীতিমত অবাক করা বিষয়।
তিনি বলেন, এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম চড়া। এর মধ্যে গ্যাস সংকটে বাসায় খাবার নেই। বাড়তি টাকা দিয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। রাস্তায় নামলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কিভাবে বাঁচবে?
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বলেন, গ্যাস সংকটের সিএনজি অটোরিকশা, হিউম্যান হলার ও বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ ছিল। এখনও কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। গ্যাসনির্ভর যানবাহনগুলিতে কিছুটা ভাড়া বেশি নিচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এ সংকট কমবে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামে দৈনিক ২৭৫ থেকে ৩২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে বাসা-বাড়িতে গ্যাসের চাহিদা ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল সন্ধ্যা থেকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করছি, এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।