চট্টবাণী ডেস্ক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের তালিকা করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর প্রেক্ষিতে সিএমপির সদর দপ্তর থেকে ১৬ থানার ওসির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই), চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ), চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া), চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত হয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫১২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে পিস্তল, রিভলবার, একনলা ও দোনলা বন্দুক, শর্টগান, রাইফেল।
নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্র থানায় জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তারপরও নির্বাচনে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার দেখা যায়। এর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ২৫ থেকে ৭০ বছর বয়সী দেশের কোনো নাগরিকের জীবন ঝুঁকিতে থাকলে তিনি অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আগ্নেয়াস্ত্র শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ২৫টি, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ২৯টি, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৭টি, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৩৪টি, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ২০টি, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৭টি, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেওয়া হয় ২৬টি অস্ত্রের লাইসেন্স। ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফি দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করেছেন ২ হাজার ১৭৮ জন, ফি মুক্ত নবায়ন করেছেন ৪৮ জন, উপজেলা পর্যায়ে ফি দিয়ে নবায়ন করেছেন ২১৪ জন। ২০১৮ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড প্রদান শুরু হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে থাকা তিন হাজার ৬৭৩টি অস্ত্রের লাইসেন্স করা হয়।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, বৈধ অস্ত্র থানায় জমা দিতে ব্যবহারকারীদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে। এরই মধ্যে বিশেষ অভিযানে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এবং কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, নির্বাচনটাই অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের প্রধান ক্ষেত্র। তাই এখনই যদি এসব অস্ত্র উদ্ধার করা না যায়,তাহলে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি সৃষ্টির আশংকা থেকেই যায়।
পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে আচরণবিধি ভাঙার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা গত নির্বাচনে কোথায় কোথায় সহিংসতা হয়েছে, সেটা মাথায় নিয়ে কাজ করছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে ১৫টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বৈধ বা অবৈধ কোনও অস্ত্রই নির্বাচনে ব্যবহারের সুযোগ নেই। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করার জন্য আমাদের কার্যক্রম চলছে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। সন্দ্বীপে নৌবাহিনী মোতায়েন হচ্ছে।