চট্টবাণী ডেস্ক: নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে (এফওসি) কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপিত হয়েছে। বিশেষত বৈঠকে তিস্তা চুক্তির ওপর তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে উভয় পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে সংযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, এ ধরনের সহযোগিতা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব ফলাফল প্রতিফলিত করে।
দুই পররাষ্ট্র সচিব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানি সংক্রান্ত সমস্যা, কনস্যুলার ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেন। তারা এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, তা নিয়েও আলোচনা করেন।
সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা উচিত বলে উভয়পক্ষ পুনর্ব্যক্ত করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেন। এর মধ্যে ছিল-তিস্তা চুক্তি এবং অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তির প্রাথমিক সমাপ্তি, বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্য থেকে বাণিজ্য বাধা দূর করা এবং দুই দেশের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বৈঠকে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর ও প্রসারিত করার অনুরোধ জানান। তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের সহায়তাও চেয়েছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি দুই দেশের বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সাউথ এবং জি-২০ এর ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারে নেতৃত্বের অঙ্গীকারের আশ্বাস দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
এদিকে এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন এবং ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রশংসা করেছে ভারত। উভয়পক্ষ সীমান্ত ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বাণিজ্য ও সংযোগ, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছে। উভয়পক্ষ উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয়েও মতবিনিময় করেছে।
পরবর্তী এফওসি পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় দুই দেশের এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।