চট্টবাণী ডেস্ক: বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দেশের অঙ্গন ছাড়িয়ে বিদেশেও যাতে সমাদৃত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
অভিনেতা কামরুল আলম খান খসরু ও অভিনেত্রী রোজিনাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২-এ ২৭টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের সমাজকে চলচ্চিত্র সচেতন করতে পারে। আনন্দ দিতে পারে, আবার সংস্কারও করতে পারে। ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারে, প্রেরণা দিতে পারে, মানুষকে জাতি গঠনে ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যারা চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রিয় ভাই-বোনরা এখানে আছেন তাদের আমি বলবো, যারা বিভিন্ন চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন, আপনারা একটু নজর দিলে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে খুব ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায়, তা কিন্তু প্রমাণ হয়েছে। আমি বলতে পারি ইদানীং যত চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে, প্রতিটি কিন্তু পরিবার দেখতে পারে, মানুষ যেতে পারে, একসঙ্গে বসতে পারে এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারে, মানুষের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে। এই একটা অনুভূতি কিন্তু ফিরে এসেছে। এভাবে আপনারা দাঁড়িয়ে যান, এখন তো ডিজিটাল যুগ, কাজেই আমি বলবো যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র যাতে নির্মাণ হয় সেই পদক্ষেপ আপনারা নেবেন, সেটাই আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই যে আমাদের চলচ্চিত্র দেশের অঙ্গন ছাড়িয়ে বিদেশেও সমাদৃত হোক। আমাদের পরিচালক প্রযোজক কলাকুশলী যারা আছেন সবাইকে আমি এই আহ্বানই করবো, আপনারা এদিকে আরেকটু মনোযোগ দিন। কারণ যেহেতু আমাদের মানুষের সাধারণ জীবনে সচ্ছলতা এসেছে, তাই তারা বিনোদনের দিকে কিন্তু আরও ঝুঁকছে। বিনোদনের ক্ষেত্রে আপনারা তা তৈরি করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণটা গুরুত্বপূর্ণ, আমরা ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করে দিয়েছি।
শিশুতোষ চলচ্চিত্রও নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আরেকটু অনুরোধ থাকবে শিশুদের জন্য, আসলে আমাদের শিশুদের জন্য বিনোদনের ক্ষেত্রটা খুব সীমিত। কাজেই শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণটা আরও একান্তভাবে জরুরি। আমাদের শিশুশিল্পীরা যে আমি দেখি, এত চমৎকার অভিনয় করে, তা বলার মত না। আর সেখান থেকেও আমাদের আস্তে আস্তে অনেক নায়িকা গড়ে উঠেছে। কাজেই শিশু চলচ্চিত্র নির্মাণ, সে দিকেও দৃষ্টি দেবেন। এক্ষেত্রে আরও বেশি সহযোগিতা লাগলে আমরা দেব, যদিও আমাদের সেই সময় শেষ। তারপরও আমরা যেখানেই থাকি সহযোগিতা করে যাব।
‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে যে—বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে তার জীবনী নিয়ে একটি চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ নির্মাণ করেছি। ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক মিস্টার শ্যাম বেনেগাল এটা পরিচালনা করেছেন। ভারতের জন্য হিন্দি ভাষায় এবং বাংলাদেশের জন্য বাংলা ও হিন্দি দুটো ভাষায় ছবিটা মুক্তি পেয়েছে, প্রথমে বাংলাদেশে পরে ভারতে। এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।