চট্টবাণী: বিএনপি-জামায়াতের ডাকা রোববার (২৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী হরতাল নগরে ও জেলায় নিরুত্তাপভাবে পালিত হয়েছে।
রোববার বন্দরনগরীতে হরতাল সমর্থনে কোথাও হরতাল ডাকা পিকেটারদের দেখা যায়নি।
অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় যানবাহন চলাচল ছিল কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে।
নগরের কাজীর দেউরি, আন্দরকিল্লা, জামালখান, চকবাজার, মুরাদপুর ও অক্সিজেন মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল। তবে ব্যক্তিগত যানবাহন কম দেখা গেছে রাস্তায়। রিকশা এবং ছোটো গাড়ির দাপটই বেশি। তবে লোকজনের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। হরতালকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল চোখে পড়ার মতো। নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখতে নগরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
সকাল থেকেই নগরের কাজীর দেউড়ি নাসিমন ভবনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয় ও এর আশপাশে কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। কার্যালয়ের মূল গেটে ঝুলছে তালা। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনের মাঠে ক্রিকেট খেলা খেলেছে কিছু কিশোর। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও এর আশপাশের এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
হরতালের সমর্থনে নগরের পাচঁলাইশ থানার প্রবর্তক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। সেখানে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেকবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ, সহ-সাধারণ নুহ গাজী সেলিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দিন, কোতোয়ালী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এন মোহাম্মদ রিমন, বন্দর থানা আহ্বায়ক রিয়াজ উদ্দিন রাজু ও চান্দগাঁও থানা সদস্য সচিব মো. শহীদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে নগরের বাকলিয়া থানার নতুন ব্রীজ এলাকায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সদস্য মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, মুস্তাফিজুর রহমান, হামিদুল হক মন্নান, নুরুল কবির, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী ওসমান, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আসগর, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহী, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মন্জুর আলম তালুকদার, সাতকানিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইলিয়াস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নগরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় বিএনপিপন্থী আইনজীবী, নগরের কোতোয়ালী থানার স্টেশন রোড এলাকায় কোতোয়ালী থানা যুবদল, পাহাড়তলী বাজার ডিটি রোড় পাহাড়তলী থানা যুবদল, নগরের নয়াবাজার বিশ্বরোড় এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে রোববারের হরতালকে ঘেন্দ্র শনিবার রাত থেকে রোববার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা বলে দাবি করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার ও হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
বিএনপি থেকে দাবি করা গ্রেফতার নেতাকর্মীরা হলেন-পাহাড়তলী থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, পাঁচলাইশ থানা যুবদলের সদস্য হাসান চৌধুরী তোফা, যুবদল নেতা মোহাম্মদ মোরশেদ, শুলকবহর ওয়ার্ড যুবদল আহ্বায়ক সাদেক আহমদ, ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ হোসেন, ৯নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাত, খুলশী থানা যুবদল নেতা দিদার হোসেন মানিক, সৈয়দ মেহেদী রেজা ববি, সৈয়দ কামাল রেজা, আকবর শাহ থানা তাঁতী দলের সভাপতি মোহাম্মদ নেছার আহমদ, থানা শ্রমিক দল নেতা মো. সোহেল, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. রাশেদ, পাহাড়তলী থানা বিএনপি কর্মী গোলাম কিবরিয়া, মো. আরমান, সদরঘাট থানা বিএনপির কর্মী মোবারক হোসেন শাহরিয়ার, চাঁন্দগাও থানা বিএনপির কর্মী টিপু সুলতান জুয়েল, আবদুর রকিব ও কোতোয়ালী থানা বিএনপির কর্মী জাহাঙ্গীর আলম, মো. খোকন।
গ্রেফতারের বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তরের সমন্বয়ক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, শনিবার রাত থেকে রোববার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের ১৯ জন নেতাকর্মীকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করা হয়েছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্ততায় হরতাল পালন করেছে।
সিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দেখতে নগরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখেছেন কমিশনার স্যার ও অতিরিক্ত কমিশনার স্যাররা। নগরে কোথাও কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সূষ্টি হয়নি। নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।