চট্টবাণী: নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, পাকিস্তানপন্থী বিএনপি-জামায়াতের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। জামায়াত তো সরাসরি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রত্যক্ষ শাগরেদ ছিল।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল তো প্রকাশ্যেই বলেছেন পাকিস্তান আমলই ভালো ছিল। আত্মস্বীকৃত এই পাকিস্তানিরা বাংলাদেশে কীভাবে রাজনীতি করেন- সেটাই বড় প্রশ্ন।
নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে নির্দিষ্ট সময়েই হবে। কোনো বিদেশি শক্তি যারা একাত্তরে পাকিস্তানের মদদদাতা ছিল এবং নানাভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অপঘাত করেছে সেই সব দেশের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) নগরের কাজির দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশি ও আন্তর্জাতিক শক্তির প্রত্যক্ষ যোগসাজশে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছিল জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি। কেননা তিনি খুনি চক্রের মোস্তাককে দিয়ে তড়িঘড়ি করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দায়মুক্তির ঘোষণা দেন। স্পষ্টই প্রমাণিত সামরিক স্বৈরাশাসক জিয়াউর রহমানই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের মূল প্রতি নায়ক। জামায়াত ও বিএনপিসহ তারা আজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, পনেরোই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলো পালন করেন না এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছিল এমন একটি দল সিপিবিও জাতীয় শোক দিবস পালন করে না। এতে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে প্রগতিবাদী ও দক্ষিণপন্থী তথা ডান-বামের মিশ্রণ যুক্ত হয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি লড়াকু রাজনৈতিক শক্তি। রাজনৈতিকভাবেই আওয়ামী লীগ সব প্রতিকূলতাকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশকে বার বার সংকট থেকে পরিত্রাণ দিয়েছে। এমনকি শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে আওয়ামী লীগ বার বার গ্রিক পুরানের ফিনিক্স পাখির মতো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সুতরাং আওয়ামী লীগ অবিনাশী শক্তি। এই শক্তির ক্ষয় নেই। তাই যারা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে তারাই নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের শিক্ষা। এই শিক্ষাকে যারা নিতে চায় না তারা ইতিহাসের ধ্বংসস্তূপে নিক্ষিপ্ত হবে।
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য কয়েক হাজার বছর আগে। বাংলাকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা এই মহান অর্জন ধূলিস্যাৎ করে দিতে চেয়েছিল তাদের পরিণতি ও ধ্বংস অনিবার্য।
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান ও চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন শেষে বড়পোল চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও কালো ব্যাচ ধারণের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে সকাল ১০টায় নগরের কাজীর দেউড়ির আইসিসি কনভেশন হলে খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল শেষে আলোচনা সভা শুরু হয়। শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্য এবং পনেরোই আগস্ট শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে হজরত গরিবুল্লাহ শাহ (র.), বদর শাহ (র.), মিসকিন শাহ (র.) ও বদনা শাহ (র.) মাজারে এতিম ও দুস্থদের তবররক বিতরণ করা হয়।