বিশেষ প্রতিনিধি: বান্দরবানে বৃষ্টিপাত কমায় চার দিন পর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সারা দেশের সঙ্গে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া চার দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকটও।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় বান্দরবান জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আংশিক উন্নতি হয়েছে। অধিকাংশ প্লাবিত এলাকা ও সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে বান্দরবান-কেরানীহাট-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হলুদিয়া, বায়তুলইজ্জত এলাকায় সড়কে পানি উঠায় সারা দেশের সঙ্গে বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তিন দিন ধরে।
এছাড়া পাহাড় ধসে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ রয়েছে। জেলা সদরের মেম্বার পাড়া, আর্মিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, ওয়াপদা ব্রিজ এলাকা এবং লামা, আলীকদম উপজেলায় এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার পরিবার। জেলায় দুই শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। বুধবার (৯ আগস্ট) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি থেকে খংচা মারমা নামের আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সদরে কালাঘাটা গুদারপাড় এলাকায় পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন-নূর নাহার (৪২) ও সাবুকননেছা (১৪)। এছাড়া আলীকদমে বন্যার পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়। তবে নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়িতে ও টংকাবর্তীতে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে দুইজন নিখোঁজ রয়েছে।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সৌরভ দাস শেখর বলেন, বিগত ৩০ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়নি বান্দরবানবাসী। প্লাবিত অধিকাংশ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। প্লাবিত এলাকাগুলো কাঁদা মাটি এবং ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে পৌরসভা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বশীল কনভেনার মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, পৌরসভার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি প্লাবিত হওয়ায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সবগুলো মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে মেরামতের মাধ্যমে দ্রুত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বান্দরবান জেলার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লামা ও সদর উপজেলা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী, প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।