অরুন নাথ : চট্টগ্রাম শহরের লাগোয়া কর্ণফুলী-আনোয়ারা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ একসময় অবহেলিত ছিল । নদী পার হতে ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট সময় নিয়ে শহরে পৌঁছানো হতো এখন আর এতো সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয় না । একদিকে শাহ আমানত (কর্ণফুলী) নদীর উপর স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের ফলে মাত্র তিন মিনিটে পৌঁছানো যায় কর্ণফুলী ব্রীজ এতে যোগাযোগের আমুল পরিবর্তন আসে ।
চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের প্রচেষ্ঠায় বর্তমানে কর্ণফুলী -আনোয়ারায় চলছে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। আনোয়ারা উপজেলার আয়তন ১৬৪.১৩ বর্গ কিমি, আর কর্ণফুলী উপজেলার আয়তন ১৩৬.৫৯বর্গ কিমি.।
দক্ষিণ চট্টগ্রাম কর্ণফুলী-পটিয়া পাড়ি দিয়ে যেতে হয় বিশ্বের অন্যতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, ভ্রমন পিপাসুদের জন্য রয়েছে আনোয়ারায় পারকী সমুদ্র সৈকত, এরমধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের পরির্বতন ইতিমধ্যে অনেকাংশই দৃশ্যমান।
এ টানেল ধরেই চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নত হচ্ছে এবং পাশাপাশি রেলসংযোগ ও যুগান্তকারী সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। নির্মাণাধীন এই সড়কের দুপাশেই শিল্প কারখানা এবং আবাসনের নতুন সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। নতুন করে চট্টগ্রাম মহানগরের আওতায় আনোয়ারায় মাস্টার প্লানের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এতে বিস্তৃত হবে মহানগরের আয়তন। যার ফলে অনেকটা অদ্যুষিত গ্রামীণ জনপদ হিসেবে পরে থাকা নদীর দক্ষিণ পাড়ে ও এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড হয়ে কর্ণফুলী টানেলের ভেতর দিয়ে যানবাহন উঠবে কক্সবাজার মহাসড়কে।
এ লক্ষ্যে প্রস্তুত হচ্ছে আনোয়ারা থেকে শিকলবাহা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার ছয়লেনের সড়ক এর কাজ ও টানেলের নির্মাণের সঙ্গে শেষ হবে । এ ছাড়া ও এগিয়ে চলেছে দোহাজারি কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের কাজ অতি শিগগিরই শুভ উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু টানেল ও কক্সবাজার পর্যন্ত রেল চলাচল। কর্ণফুলীর দক্ষিণপাড় আনোয়ারায় রয়েছে কাফকো (কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড),সিইউএফএল (চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড), কোরিয়ান ইজিজেড এবং বিভিন্ন ভারী শিল্প কারখানা। চায়না ইকোনমিক জোন বাস্তবায়ন বড় একটি ধাপ এগিয়ে দেবে এ টানেল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা টানেল ঘিরে আনোয়ারা উপজেলা নতুন করে রূপ পাচ্ছে উপশহরে। পরিবর্তন ঘটেছে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায়। টানেলের সংযোগ সড়কের জন্য শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার সড়কের ছয় লাইনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আনোয়ারা উপজেলায় বঙ্গবন্ধু টানেল হয়ে কর্ণফুলী নদীর ঐপাড়ে রয়েছে শাহ আমানত আন্তজার্তিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, এদিকে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আর্কষন করবে আনোয়ারা ।
এসব কর্মযজ্ঞের কারণে চট্টগ্রাম শহরে ওয়ান সিটি টু টাউন স্বপ্নের দ্বার উম্মেচনে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। পারকি সমুদ্র সৈকতের পাশে চলছে বিশ্বমানের পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ।
পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। আনোয়ারায় শিল্প কারখানায় একদিকে বেকারদের কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আগমনে হয়ে উঠবে প্রানবন্ত শহর। আবাসন খাতে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে ফলে অর্থনীতির চাকা ঘুরে যাবে ।