চট্টবাণী ডেস্ক: ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তুলে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে তিনি হামলা-মারধরের শিকার হন।
এসব পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তিনি মনে করেন বর্তমান সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। যে কারণে এই সরকারের অধীনে জীবনে আর কোনো নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন না। পাশাপাশি এই নির্বাচনকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সোমবার (১৭ জুলাই) বেটার লাইফ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে রাজধানীর রামপুরায় মহানগরও প্রজেক্টের ডি ব্লকের দুই নম্বর রোডে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হিরো আলম বলেন, সকাল থেকে আমার ওপর হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী বিকেলে তারা জয় বাংলা স্লোগান তুলে আমার ওপর হামলা করে। জোর করে ব্যালটে সিল মারতে বাধা দেওয়ায় তারা আমার ওপর হামলা করে। এ বিষয়ে আমি আমেরিকান অ্যাম্বাসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যত যায়গায় চিঠি দেওয়ার দরকার দেব। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি এর আগে অভিযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু তারা তা আমলে নেয়নি। এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার আস্থা নেই।
তিনি বলেন, বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে আমরা যখন ঢুকি, দেখতে পাই আওয়ামী লীগের লোকজন ব্যালটে সিল মারছে। আমরা তখন তাদের বলি কেন সিল মারছেন? এ কথা বলা কি আমার অপরাধ হয়েছে? পরে সেখান থেকে বের হবার পর তারা আমার ওপর হামলা করে।
বলা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া কার্ড নিয়ে আপনার লোকজন কেন্দ্রে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করে। আপনার লোকজনই আপনাকে মারধর করেছে। বনানীতে আটক হওয়া এক যুবক এ দাবি করে। এ ব্যাপারে হিরো আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ওপর যারা হামলা করেছে তারা আওয়ামী লীগের লোক। যে ব্যক্তি বলেছে সে আমার লোক, তাকে আমার সামনে আনা হোক। আর সে যদি বলেই থাকে সে আমাকে মেরেছে তাহলে তাকে শাস্তি দেন; তাকে রিমান্ডে নেন। আমার এতে কোনো আপত্তি নেই। আমি চাই আমাকে যারা মেরেছে তাদের শাস্তি হোক। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী, আমার লোক যদি আমার ওপর হামলা করে তাহলে আমি কি তাকে চিনব না?
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলাকালে রাজধানীর বনানী এলাকায় মারধরের শিকার হন হিরো আলম। ঘটনার সময় তিনি বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হিরো আলম বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ও কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে নৌকা প্রতীকের কার্ডধারী কিছু লোকজন তাকে গালমন্দ করতে থাকেন এবং কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে দেখে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে গার্ড দিয়ে মূল ফটক পর্যন্ত নিয়ে যান। কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে ১৬ নম্বর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন হিরো আলম। তখন পুলিশ সদস্যরা না থাকায় নৌকা প্রতীকের কার্ডধারী কিছু লোকজন পেছন থেকে এসে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং মারধর করতে থাকেন।
এ সময় হিরো আলমের সঙ্গে থাকা সমর্থকরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান। হামলাকারীরা তাকে ২৩ নম্বর সড়ক পর্যন্ত ধাওয়া করেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। মারধরের শিকার হওয়ার পর হিরো আলম বেটার লাইফ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনে ভোটকেন্দ্র আছে ১২৫টি এবং ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন।