চট্টবাণী ডেস্ক: ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারেঙ্গি। খবর এএফপির।
উদ্ধারকাজ চলছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে অনেকে গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন। দুর্ঘটনায় ৮৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে।
ভারতের পূর্বাঞ্চলের ওডিশা রাজ্যের বালাসোর এলাকার কাছে শুক্রবার রাতে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ হলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে—করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিতে আঘাত করে। পরে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ে। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি কলকাতা যাচ্ছিলো। শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চেন্নাইগামী ছিল।
এর আগে ১৯৮১ সালের ৬ জুন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে সেতু পার হওয়ার সময় একটি ট্রেন বাগমতি নদীতে পড়ে যায়। ওই ঘটনায় ৭৫০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়। এটিই ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে।
১৯৯৫ সালের ২০ আগস্ট উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে পুরুষোত্তম এক্সপ্রেসের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল অন্তত ৩০৫ জন।
ঠিক তার তিন বছর তিন মাস পর ১৯৯৮ সালের ২৬ নভেম্বর পাঞ্জাবের খান্নায় ফ্রন্টিয়ার গোল্ডেন টেম্পল মেইলের ৩টি বগি লাইনচ্যুত হলে জম্মু তাওয়াই-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস গোল্ডেন টেম্পল মেইলকে ধাক্কা দিলে ২১২ জন নিহত হন।
পরের বছর ১৯৯৯ সালের ২ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের গাইসালে অবধ আসাম এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা ব্রহ্মপুত্র মেইল ট্রেনে সজোরে ধাক্কা দিলে ২৮৫ জনের বেশি মানুষ নিহত ও ৩ শতাধিক মানুষ আহত হন। হতাহতদের বেশিরভাগই ছিলেন দেশটির সেনাবাহিনী, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সদস্য।
২০১০ সালের ২৮ মে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামে মুম্বাইগামী জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পণব্যাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪৮ যাত্রী নিহত হন।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের পুখরায়ানে ইন্দোর–রাজেন্দ্রনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ১৫২ জন মারা যান এবং আহত হন ২৬০ জন।
এর আগে ২০০২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিহার রাজ্যের রফিগঞ্জের একটি নদীর সেতুর ওপর রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হলে ১৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। তারও আগে ১৯৬৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুতে পাম্বান–ধানুস্কোদি যাত্রবাহী ট্রেন রামেশ্বরম ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়লে প্রাণ হারান ১২৬ জনের বেশি যাত্রী।