মো: শহীদুল ইসলাম, থানচি : বান্দরবানের থানচি উপজেলা সদরে মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ১১টি বম সম্প্রদায়ের পরিবার।
রবিবার ২৮ মে)দুপুর সাড়ে ১২ টা ১১ পরিবারের ৩২ জন সদস্য থানচি সদরে পৌছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ১০ জন, নারী ১৩ জন ও শিশু ৯ জন। উপজেলা প্রশাসন আশ্রয় নেওয়া পরিবারের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন।
১১ পরিবারের সবাই রুমা উপজেলা ৩ নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে বাকলাই পাড়া বাসিন্দা বলে জানা যায়। আশ্রয় নেওয়া পরিবারের মধ্যে একজন এসএসসি ২০২৩ পরিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানা যায় ।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় পরিক্ষার্থী লালমুন সিয়াম বমের সাথে। সে জানায় পরিস্থিতি খারাপের কারনে আমার এসএসসি পরিক্ষা দেওয়া সম্ভব হইনাই, আমার এগিয়ে চলার পথ হইতো থেমে যাবে আমি যাহাতে পরিক্ষা দিতে পারি সকলের সহযোগীতা কামনা করি।
উল্লেখ্য যে ,দীর্ঘ ৯মাস ধরে কুকি চিন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর গোলাগুলির মধ্যবর্তী স্থান বাকলাই পাড়াতে অবস্থান করছে নিজ গ্রাম ছেড়ে আসা পরিবারদের।
সুত্রে জানা যায়, গত শনিবার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই ম্রোর সাথে যোগাযোগ করলে তার সহযোগিতায় পাড়াবাসীরা থানচি সদরে চলে আসে এবং থানচি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়।
আশ্রয় শিবিরের বাকলাই পাড়ার প্রধান (কারবারী) থংলিয়াত বম ৯৮ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের পাড়ায় মোট ৩৭ পরিবার ছিল।
জানা যায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) এর সাথে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৬ মাস আগেই ২৬ পরিবারের লোকজন অন্যত্র চলে যায় এবং বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়।
মেরী বম থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অনেক কষ্টে আছি তো ভাই তবে এখানে আসার পর থেকে ভয় লাগছে না,খাবারের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,খাবার ও বিদ্যুৎ আলোর ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করে দিছে।
১১ পরিবার ২০২২ হতে মে ২০২৩ গত ৯ মাস যাবৎ অনেক কষ্টে অনাহারে অর্ধহারে নির্ঘুম সময় পার করেছে পরিস্থিতির কারনে।
ধর্মযাজক জাওলিয়ান বম বলেন,আমরা এখানে সবাই মিলে রান্না করে খাচ্ছি তা ইউএনও এসে রান্নাঘর ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছে।
আশ্রয় শিবিরের বাকলাই পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাওরামতং বম সাংবাদিকদের বলেন, অক্টোবর ২০২২ হতে আদ্যবধি পর্যন্ত স্কুল ও বন্ধ, ছেলে মেয়েও নেই,কোন সময় বাড়ীতে, কোন সময় জঙ্গলে খাওয়া দাওয়া ঠিক ছিল না।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল মনসূর বলেন, আশ্রয় নেওয়া পরিবারের জন্য উপজেলা প্রশাসন সব সময় প্রস্তুত ইতিমধ্যে তাদের থাকা খাওয়া ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
উপজেলা সদরে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা ১১ পরিবার রুমা উপজেলার ৩ নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড, বাকলাই পাড়ার বাসিন্দা।
থানচি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইমদাদুল হক বলেন,আশ্রয় নেওয়া পরিবারের নিরাপত্তার জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত আর জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের রুটিন দায়িত্ব।