বিশেষ প্রতিনিধি,পার্বত্য চট্টগ্রাম : বান্দরবানের রোয়াংছড়ির দুর্গম খামতাং পাড়া এলাকা থেকে আটজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার আতঙ্কে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খিয়া সম্প্রদায়ের ৪৫ পরিবারের ১৭৪ জন এলাকা ছেড়ে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
শুক্রবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা সদর ইউপির খামতাং পাড়া এলাকা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে উপজেলার খামতাং পাড়া এলাকায় সশস্ত্র দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। পরে আতংকিত হয়ে ওই এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খিয়া সম্প্রদায়ের ৪৫ পরিবারের ১৭৪ জন বিভিন্ন পথে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন।
এদিকে সকালে খামতাং পাড়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ আটজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে দুপুরে রোয়াংছড়ি সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার গহীনে নির্জন স্থানে গিয়ে পুলিশ গুলিবিদ্ধ আটজনের মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, খামতাং পাড়ায় থেমে থেমে দুই শসস্ত্র গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ সংস্কার) এর মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে গোলাগুলির ঘটনা থেমে গেলে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে স্বশস্ত্র পোশাক পরিহিত গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। নিহতদের পোশাক দেখে ধারণা করা হচ্ছে, নিহতরা সবাই কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্য।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মান্নান জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরেই নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পাহাড়ের দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং নিহতদের নাম পরিচয় খুঁজে বের করতে পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বান্দরবানে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষা, অপরাধী ধরতে ও মাদক উদ্ধারে পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, দুটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর আতঙ্কে বেশ কিছু এলাকাবাসী পালিয়ে রোয়াংছড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন ও সেনাবাহিনী।