চট্টবাণী: জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, কেক কাটা, সাতই মার্চের ভাষণ প্রচারসহ নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এটা বাস্তবতা। তারপরও কেউ কেউ এ বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেন।
আমি জানি না কী কারণে কেন করেন, এটা আমার বোধগম্য নয়। বঙ্গবন্ধু তদানীন্তন পাকিস্তানে আন্দোলন করেছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং বাঙালির অধিকার আদায়ে অনড় অবস্থান নিয়েছিলেন। বারে বারে উনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। পাকিস্তান আমলে প্রায় ১৩ বছরের বেশি সময় জেল খেটেছেন বঙ্গবন্ধু। সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি বাঙালির অধিকার চাই। এরপরও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ কথাটি যারা মানতে চায় না সেটি আমাদের অবাক করে।
আমি মনে করি আওয়ামী লীগকে নিয়ে কেউ আলোচনা সমালোচনা করতে পারে। যদি সত্যিকার অর্থে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি, এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করি তাহলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা দুঃসাহস। এ অপরাধ কেউ করবেন বলে আমি মনে করি না। শুধু তারাই করতে পারেন যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। সংকীর্ণতা দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করব। বঙ্গবন্ধু দেশের সম্পদ, বাঙালির সম্পদ। বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এটা বঙ্গবন্ধুর কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি এটা বঙ্গবন্ধুর অবদান। আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও বিদেশে গেলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো। ইমিগ্রেশনে অহেতুক প্রশ্ন করা হতো। এখন সম্মান ও সমীহ করেন। এটা বঙ্গবন্ধু কন্যা, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার কারণে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর পিএইচপি ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও কেক কাটা পর্ব। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী ফরিদ। সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম।
আলোচনা করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার।
সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে জাতির পিতার জন্মদিন উদযাপন করে আসছে। জাতির পিতার জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না। হায়েনারা ১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট বত্রিশ নম্বর বাড়িতে গুলি করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, রক্ত ঝরিয়েছে। কিন্তু তারা জানত না বত্রিশ নম্বরের বাড়ির সেই রক্ত থেকে লাখ লাখ বঙ্গবন্ধুর সৈনিক সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নতির শিখরে এগিয়ে যাচ্ছে।
চৌধুরী ফরিদ বলেন, জাতির পিতা না হলে স্বাধীনতা পেতাম না। এটা যারা স্বীকার করে না তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ সভাপতি রুবেল খান, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহররম হোসাইন, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক সোহেল সরওয়ার, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য মোয়াজ্জেমুল হক, সিইউজের নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন হোসেন দুলাল, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুভাষ কারণ, সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চক্রবর্তী, সিনিয়র সাংবাদিক অঞ্জন কুমার সেন, নির্মল চন্দ্র দাশ, দেব প্রসাদ দাশ দেবু, জ্যোতির্ময় নন্দী, মুস্তফা নঈম, বিপুল বড়ুয়া, মোহাম্মদ ফারুক, বিশ্বজিৎবড়ুয়া, আবুল হাসনাত, আলমগীর সবুজ, সুলতান মাহমুদ সেলিম, মান্নান মেহেদী, যীশু রায় চৌধুরী, জীবক বড়ুয়া, রবি শঙ্কর, অমিত বড়ুয়া, আজিজুল কদির, সুবল বড়ুয়া প্রমুখ।