চট্টবাণী ডেস্ক: মাগুরায় ভুয়া মামলা দেখিয়ে ভিশন ড্রাগস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এক কোটি টাকা ঘুষ দাবি এবং ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ভ্যাট অফিসের দুই রাজস্ব কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে মাগুরা বিভাগীয় কার্যালয়ে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মুহম্মদ আল মনছুরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ভিশন ড্রাগস লিমিটেডের ওষুধবাহী একটি কাভার্ড ভ্যান আটক করেন। পরে ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিন কোটি টাকার ‘ট্যাক্স ফাঁকি’ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তারা। পাশাপাশি এই তিন কোটি টাকার দায় থেকে মুক্তি পেতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে এক কোটি টাকার ঘুষ দাবি করেন ওই দুই কর্মকর্তা।
এ টাকা আদায়ে তারা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন দফায় ২০ লাখ টাকা আদায়ও করেন। তার পরও বাকি টাকার জন্য প্রতিষ্ঠানটির পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান চলাচলে বাধা দিয়ে হয়রানি চালিয়ে আসছিলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হাসান গত ৮ ফেব্রুয়ারি যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে ঘুষ আদায়ের নানা প্রমাণপত্র উপস্থাপন করেন তিনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিলে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
মাগুরা ভিশন ড্রাগস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হাসান বলেন, ‘২০১৮ সালে কয়েকজন বন্ধু মিলে মাগুরা শহরের ইছাখাদা এলাকায় নিজেদের জমি বিক্রি ও ঋণ করে প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করিয়েছি। সরকারি নিয়ম মেনেই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এ দুই কর্মকর্তা ভুয়া মামলার কাগজপত্র দেখিয়ে আমাদের পণ্য পরিবহনে নানাভাবে বাধা দেন। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে ও ক্ষতি কমিয়ে আনতে তিন দফায় তাদের ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তার পরও তাদের দাবিকৃত বাকি টাকা আদায়ে চাপ দিচ্ছিলেন। ’
এ বিষয়ে যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে মাগুরা কাস্টমস, এক্সাইজ এবং ভ্যাট অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘দাপ্তরিক দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে। বিষয়টি জানার পরই ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত রাজস্ব কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম ভুঁইয়াকে চুয়াডাঙ্গা এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মুহম্মদ আল মনছুরকে মেহেরপুর জেলায় স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। পরে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অভিযুক্ত দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ’