• সারাদেশ

    যশোরের বিভিন্ন অপ্রশস্ত সড়কে রেলের অপরিকল্পিত ডিভাইডারঃ প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা

      প্রতিনিধি ১০ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:৫৩:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    খুলনা অফিস: যশোর জেলার বিভিন্ন অপ্রশস্ত সড়কে রেলের ডিভাইডার স্থাপনের ফলে দূর্ঘটনার হার আশংকাজনক হারে বেড়েছে। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিভাইডার স্থাপন করা উদ্দেশ্য হলেও শুধুমাত্র অপরিকল্পিত এবং অবৈজ্ঞানিক ভাবে স্থাপন করায় ফলাফল উল্টো হচ্ছে।



    বিভিন্ন মহাসড়কের যে সব জায়গায় রেলক্রসিং আছে সেসব জায়গায় রেল এবং পরিবহনের সংঘর্ষ এড়াতে রেল কর্তৃপক্ষ রেললাইন এর দুপাশে ১৫/২০ ফুট লম্বা এবং ২ ফুট উঁচু দুটি করে ডিভাইডার স্থাপন করেছে। কিন্তু এগুলো স্থাপন করার সময় পারিপার্শ্বিক কোনো অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। যেসব রাস্তায় ডিভাইডার দেওয়া হয়েছে সেগুলো এত সরু যে এক লেনে একটা গাড়ি ঢুকলে সেখানে একজন মানুষ দাঁড়ানোরও জায়গা থাকেনা। এছাড়াও দিনে বা রাতে এগুলো চিহ্নিত করতে কোনো সাইন বা লাইটের ব্যবস্থা্ করা হয়নি। ফলে রাতের বেলা চলাচলকারী পরিবহনগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। দেখতে না পাওয়ার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ডিভাইডারের সাথে গাড়ির সংঘর্ষ ঘটছে।



    যশোর বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছার লাউজনি রেলক্রসিংএ সবচেয়ে বেশি দূর্ঘটনা ঘটছে। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর থাকার কারনে এটি দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক। রাতদিন ২৪ ঘন্টা এই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল করে। অবিবেচক পরিবেশবাদীদের বাঁধার কারনে এই রাস্তাটি প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট সরু থেকে গেছে। তার উপর রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডার স্হাপন করায় রাস্তার প্রশস্ততা আরও অনেকখানি কমে গেছে।

    গত ডিসেম্বর মাসেই লাউজানি রেলক্রসিংএ ৭টি মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটেছে। আর নতুন বছরে এক সপ্তাহে ঘটেছে ২টি মারাত্মক দূর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটার ফলে জান ও মালের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। তারপরও রেল কতৃপক্ষ এটিকে সরানোর বা নিরাপদ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।



    রবিবার (৮ জানুয়ারি) রাত একটায় ঘন কুয়াশার কারনে একটি কাভার্ড ভ্যান ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় উল্টে গেছে। এক লেন রাস্তা বন্ধ থাকায় সারাদিন জানজট লেগেই আছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী কাজি ওয়ালিউল হক বলেন, রাতের বেলা কুয়াশার কারনে দূর্ঘটনা বেশি ঘটছে। আমরা রেলক্রসিং এর আগে রাস্তায় যে গতিরোধক আছে তার ১৫/২০ ফুট সামনে আরও একটি করে গতিরোধক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাতে করে দূর্ঘটনার হার কমবে বলে আশা করি। ডিভাইডার তুলে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই বলে তিনি জানান।



    এদিকে বারবার একই জায়গায় দূর্ঘটনা ঘটায় ঝিকরগাছা থানার মানবিক অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্ত সম্পুর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে সোমবার (৯জানুয়ারী) ডিভাইডারে রিফ্লেক্টিং স্টিকার লাগিয়ে দিয়েছেন। এসময় সেখানে উপস্থিত নাভারন সার্কেল এ এস পি নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, আমরা ডিভাইডারে স্টিকার লাগিয়ে চালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন বলে তিনি জানান।

    পুলিশের এই উদ্যোগকে এলাকার জনগন সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে সবাই এই ডিভাইডার অপসারন করে সড়ক নিরাপদ করার দাবী জানিয়েছেন।



    নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর এর সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, জানমালের ক্ষতি সাধন কারী এই মরন ফাঁদ ডিভাইডার গুলো অপসারণ করা না হলে আমরা খুব শীঘ্রই ঘটনাস্থলে স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো।

    ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিস এর পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, সরু রাস্তায় ডিভাইডার দেওয়ার ফলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার কারণে জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে এটা অমানবিক। এর জন্য রেল কতৃপক্ষ দায়ী থাকবেন। তিনি অনতিবিলম্বে এই ডিভাইডার অপসারণ করার দাবী জানান।



    আরও খবর 4

    Sponsered content