কর্ণফুলী প্রতিনিধি: মনির আহমেদ চাকরি করতেন পতেঙ্গার পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে। বছর খানেক আগে গেছেন অবসরে।
সরকারি চাকরির সুবাদে পেনশন বাবদ পেয়েছেন মোটা অংকের টাকা। যা পরবর্তীতে এফডিআর করে রাখেন তিনি।কিন্তু কে জানতো এই পেনশনের এফডিআরই কাল হবে তাঁর মৃত্যুর পর।
এই পেনশনের টাকা নিয়েই বাবা মারা যাওয়া মাত্রই সন্তানদের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব ওঠে চরমে। এজন্য বাবা মনির আহমেদের মরদেহ ফ্রিজার ভ্যানে ফেলে রাখা হয় বাড়ির উঠানে। দীর্ঘ ৩৯ ঘণ্টা কেটে গেলেও সন্তানদের মধ্যে বিবাদ মীমাংসা না হওয়ায় আটকে থাকে দাফনও। পরে খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম। তাঁর হস্তক্ষেপেই সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় মনির আহমেদের মরদেহ।
এমনই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানী বাপের বাড়িতে।
জানা যায়, ব্যক্তিজীবনে তিন মেয়ে ও দুই ছেলের জনক মনির আহমেদ। এর মধ্যে ছোট ছেলে বিদেশে থাকেন।
গতবছর অবসরে যাওয়ার পর হঠাৎ মনির আহমেদের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান তিনি। পরে রাতে মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। এরপরই মনির আহমেদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা ব্যাংকে রাখা পেনশনের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। শুরু হয় একে অপরকে দোষারোপ। আটকে যায় জানাজা ও দাফনের কাজ। ঝগড়ার একপর্যায়ে রোববার রাতেই বাবার মরদেহ রেখে চলে যান মনির আহমেদের তিন মেয়ে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে শুরু হয় সমালোচনা। খবর পেয়ে মরদেহ দাফনের জন্য হস্তক্ষেপ করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
পরে আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয় পারিবারিক কবরস্থানে। সন্তানদের এমন কাণ্ডে হতবাক পুরো গ্রামের মানুষ।
বড় উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন বলেন, মনির আহমেদের পরিবার আসল কারণ প্রথমে আমাদের জানায়নি। পরে মরদেহ দাফনে দেরি হলে সকলে কারণ জানতে চায়। অনেক চাপাচাপির পর তাঁরা বিষয়টি স্বীকার করে।
ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, তাদের দ্বন্দ্বের কারণে বাবার মরদেহ ৩৯ ঘণ্টা ফেলে রাখে। টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে মনির আহমেদের বড় ছেলে তার বোনদের মারধরও করে। আমি হস্তক্ষেপ করে মেয়েদের ছাড়িয়ে আনি এবং ফ্রিজার ভ্যানের টাকা পরিশোধ করে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করি।