চট্টবাণী: বড়দিনে পবিত্র জপমালা রানির গির্জার বিশপ হাউসে বসেছিল বিশিষ্টজনদের মিলনমেলা। রোববার ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন আর্চ বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার।তিনি অতিথিদের নিয়ে বড়দিনের কেক কাটেন।
বিশপ বলেন, বেথলেহেমের গোশালায় মানবশিশু হয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যীশু।তাঁর আগমনে বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশা, জ্যোতির্বিদ ও পণ্ডিতরা বেথলেহেমের গোশালায় সমবেত হয়েছিলেন। সেখানে পান্থশালার ব্যবসায়ী ও অতি দরিদ্র রাখালরাও সমবেত হয়েছিলেন। তিনি সবাইকে জীর্ণ গোশালায় জড়ো করেছেন যেন সবার হ্রদয়-মনের রূপান্তর ঘটে এবং সবার পারস্পরিক সহভাগিতার মাধ্যমে সহযাত্রিক মণ্ডলী প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিশপ বলেন, পৃথিবীর কয়েকটি দেশে যখন যুদ্ধ চলছে, যুদ্ধের কারণে যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দরিদ্রদের দুঃখ দুর্দশা অবর্ণনীয় হয়ে উঠেছে, যখন রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে হানাহানি ও অশান্তি বাড়ছে তখন শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, প্রবাসী-অভিবাসী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের একত্রে মিলিত হয়ে শান্তি-ভালোবাসা, ন্যায্যতা-মুক্তি ও আনন্দের পথ অন্বেষণ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয় হয়ে পড়েছে। জগতের এ দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে পবিত্রাত্মার অনুপ্রেরণায়, পোপ মহোদয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে, ঐশবাণীর আলোকে এবং পুণ্য উপাসনার মাধ্যমে একসঙ্গে পথচলার আহ্বান আমরা পেয়েছি।
বড়দিনের পুণ্য উপাসনায় সারা বিশ্বের সব বিশ্বাসী ভক্তজন যেমন নবজাত শিশুটিকে ঘিরে আরাধনায় মিলিত হয় তেমনি বড়দিনের সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব পর্যায়ের জনগণ একত্রিত হয়ে বড়দিনের শান্তির বার্তা এবং আনন্দ সহভাগিতা করে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার পথ অনুসরণ করে এবং সম্প্রতির জন্য প্রার্থনা করে। আমরা নবজাত শিশু যীশুর কাছে আশীর্বাদ যাঞ্চা করছি, তিনি যেন সহযাত্রিক মণ্ডলীর মাধ্যমে স্বর্গীয় পিতার পরিকল্পনা বুঝতে আমাদের সাহায্য করেন এবং সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আগামী বছরটিতে আমাদের আশীর্বাদ দান করেন।
বড়দিনের গান করেন পবিত্র জপমালা রানির গির্জার কয়ার দল।
বড়দিনের উৎসবে যোগ দেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজিব রঞ্জন, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সদরঘাট শিয়া মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আমজাদ হোসেন, ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, চসিক কাউন্সিলর জওহরলাল হাজারী, পুলক খাস্তগীর, হাসান মুরাদ বিপ্লব প্রমুখ।
এর আগে শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে নয়টায়, বারোটায় ও রোববার সকাল সাড়ে আটটায় গির্জায় বড়দিনের খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়।