প্রতিনিধি ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:১৭:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি. বলেছেন, প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে জনগণ ও দেশের স্বার্থে অনেক কাজ করেছি। তিনি একজন সাহসী ও আপসহীন জননেতা ছিলেন।
অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সব সময় অগ্রভাগে ছিলেন। কখনো পিছপা হননি।দলীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি আমাদেরকে এক ও অভিন্ন রেখেছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে আইসিসি কনভেনশন সেন্টারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে নগর আওয়ামী লীগের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সন্তান ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফর হোসেন আরো বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী বড় হৃদয়ের মানুষ। জনগণের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে তিনি সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেন। আমাদেরকে নানা সময়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে যৌক্তিক পরামর্শ দিতেন এবং নেতা ও কর্মীদের সমন্বয় সাধন করতেন। সত্যিকার অর্থে মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজেই একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং পরিপূর্ণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। তাঁর এই রাজনৈতিক পাঠশালা থেকে অসংখ্য সৃজনশীল কর্মী ও নেতা গড়ে উঠেছেন এবং এরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক জীবনে সফলও হয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমার পিতা আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অন্তরে ধারণ করতেন। পিতাকে নিয়ে আমার নতুন করে কিছু বলার নেই। আজ আমরা একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি অবস্থান করছি। এক বছরেরও বেশি সময় বাকি আছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের। বিএনপি জামাত এবং স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি এখন থেকেই তাদের বিদেশী লবিস্টদের দিয়ে কীভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া যায় সেজন্য চক্রান্তের জাল বোনা শুরু করে দিয়েছে। এই চক্রান্তের জবাব দিতে হলে সংগঠনকে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে এবং প্রবীণদের অভিজ্ঞতায় ও নবীনদের উজ্জীবিত তেজে এক সুতোয় গেঁথে সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় করতে হবে।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, প্রয়াত জননেতা মহিউদ্দিন ভাই একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তি। কেননা তিনি সময়ের দাবি অনুযায়ী সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতে পারতেন। তিনি সব সময় আমাদের কাছে ছিলেন ঠিক অবিকল একজন বঙ্গবন্ধুর ছায়া হিসেবে। একজন সফল রাজনীতিকের সবচেয়ে বড়গুণ হলো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন প্রত্যেকটি সঠিক সময়োপযোগী ছিল। একারণে তিনি সফল রাজনীতিক এবং একজন অনন্য গুণী মানুষ। আজ আমাদের অনেকের মাঝে এই গুণটি নেই। মহিউদ্দিন ভাই সভাপতি হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যখন হাল ধরেছিলেন শেষের দিকে চার বছর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁর সাথে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন এবং সফলও হয়েছেন। আমরা যারা আজও মহিউদ্দিন ভাইকে অন্তরে ধারণ করি তাদেরকে সকল সংকীর্ণতা ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। যদি আমাদের ঐক্য অটুট থাকে এবং আমরা যদি এক ও অভিন্ন থাকি তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা অবশ্যই বিজয়ী হব এবং এই বিজয় ছাড়া আর অন্য কোন বিকল্প নেই।
নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য বখতিয়ার উদ্দীন খান, মো. জাবেদ, থানা আওয়ামী লীগের এম এ হালিম, মো. ইছহাক, মোমিনুল হক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সামশুল আলম, আবছার উদ্দীন চৌধুরী, গিয়াস উদ্দীন, পরিবারের পক্ষে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন, ইউনিট আওয়ামী লীগের মামুনুর রশিদ মামুন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাড. সুনীল কুমার সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আবদুচ ছালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, সৈয়দ হাসান মাহমুদ সমশের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী মো. হোসেন, হাজী জহুর আহমদ, জালাল উদ্দীন ইকবাল, আব্দুল আহাদ, আবু তাহের, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, শহিদুল আলম প্রমুখ।
এর আগে সকালে চশমা হিল জামে মসজিদের কবরস্থানে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী কবরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়া কনভেশন সেন্টারে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।