খেলাধুলা ডেস্ক: হেলায় সুযোগটা হারাল বাংলাদেশ। এমন মঞ্চ আর কবে পাবে কে জানে? জিতলেই খুলে যেত সেমিফাইনালের দরজা। সেখানেই কি না ৫ উইকেটে হার! শুরুতে ব্যাট হাতে ফ্লপ, ১২৭ রানে অলআউট। তারপর বল হাতে সেই পুঁজি নিয়ে লড়াইটাও করা হলো না। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১১ বল বাকি থাকতেই জিতল পাকিস্তান। বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙে বাবর আজমরা নাম লেখালেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে।
রোববার (৬ নভেম্বর) অ্যাডিলেড ওভালে এমন হারের পর সংগতভাবেই হতাশা ছুঁয়ে গেছে বাংলাদেশ দলকে। হারের যন্ত্রণা চাপা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসলেন ব্যাট হাতে একমাত্র লড়াই করা নাজমুল হোসেন শান্ত।
তবে একটা প্রসঙ্গ বারবারই ঘটছে। বাংলাদেশ মাঠে নামলেই তাদের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত আসছে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে যেমনটা হয়েছিল। ম্যাচ অফিসিয়ালদের দুটো ভুল সর্বনাশ করে দেয় টাইগারদের। বিরাট কোহলির ফেইক ফিল্ডিং আম্পায়ার দেখেও যেন না দেখার ভান করেছেন। যেখানে ৫ রান পেলে তো ম্যাচটাই জিততো বাংলাদেশ। এরপর ভেজা মাঠে খেলতে বাধ্য করা হয়েছে দলকে।
রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তের স্বীকার হলেন সাকিব আল হাসান। তার বিদায়েই তো মোমেন্টাম হারিয়ে শেষ অব্দি বড় স্কোর গড়া হয়নি। লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু এলবিডব্লিউ। যদিও পাকিস্তানের আবেদনে আম্পায়ার অনেক দেরিতে সিদ্ধান্ত জানান। তারপর রিভিউ নিতে ভুল করলেন না সাকিব। ব্যাটে বল লেগেছে এমনটাই আঁচ করা যাচ্ছিল। রিপ্লেতে ব্যাটে বলের হালকা স্পর্শ হয়েছে এমনটা দেখা যায়। ব্যাট মাটির কাছে ছিল। এ অবস্থায় ব্যাট মাটিতে লেগেছে স্থির থেকে তৃতীয় আম্পায়ার আউটের পক্ষেই রায় দেন। অথচ এটি আউট ছিল না।
ম্যাচ শেষে এ নিয়ে ক্ষোভ থাকল শান্তর কথায়। ৪৮ বলে ৫৪ করা এই ব্যাটসম্যান বলছিলেন, 'আমি ওখানে ছিলাম। আমাদের সবার কাছেই মনে হয়েছে আউটটা হয়নি। আমরা ওরকম সিউর ছিলাম আউটটা হয়নি। জানি না সিদ্ধান্ত কেন এমন হলো। আম্পায়ারের ওপরে কিছু বলার নেই, যত যাই করি। আমার কাছে মনে হয় তারপর আমাদের মনোযোগটা নড়ে গেছে। এটাও ঠিক আমরা ভালো খেলিনি, আমার মনে হয় শেষে মিডল ওভারে।'
তবে কোড অব কনডাক্টের কারণে এ নিয়ে বেশি কথা বলতে চান না শান্ত। শুধু জানিয়ে রাখলেন, 'না এগুলো নিয়ে আসলে আলোচনা করে লাভ নেই। আমাদের কন্ট্রোলেও নেই। এটা পুরাটাই আম্পায়ার বা ম্যাচ রেফারি যারা আছে তাদের সিদ্ধান্ত। জিনিসটা হলো আমরা যতই আলোচনা করি বা যতই কথা বলি কোনো লাভ নেই। সো এটা নিয়ে আমরা বলব না যে ড্রেসিংরুমে খুব বেশি আমরা চিন্তিত ছিলাম বা কথা বলছি। কারণ এসব কথা বলে আসলে লাভ নেই।'
সাকিবের এমন বিতর্কিত আউটই সর্বনাশ করে দিয়েছে। সে কথা অন্য সবার মতো নাজমুল হোসেন শান্তও জানেন। তাই তো সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন, 'অবশ্যই সাকিব ভাই আমাদের দলের অনেক বড় খেলোয়াড়। সবসময় ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস খেলেন এবং ভালো হয় আমাদের দলের জন্য। কিন্তু পরে যারা ব্যাটসম্যান ছিল তারাও কিন্তু অনেক ক্যাপাবল এবং তারাও অতীতে ভালো করেছে। ওই আউট নিয়ে আমরা খুব বেশি ফোকাস ছিলাম না। আউট অন্যভাবে হতে পারত। তাই ওটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না, আমরা সবাই বিশ্বাস করি টিমে যতগুলো ব্যাটসম্যান আছে সবাই ক্যাপাবল এবং যেকোনো অবস্থায় ব্যাটিং করার যোগ্য।'
কিন্তু বাস্তবতা হলো সাকিবের আউটের পর সব এলোমেলো হয়ে গেল। ব্যাটিং লাইন আপ তছনছ। দলও পেল না বড় পুঁজি। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ১২৭ নিয়ে লড়াই করা যায় না, সেটিই প্রমাণ হলো মাঠের লড়াইয়ে!