চট্টবাণী ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পালাবার পথ পাবে না। আওয়ামী লীগের নেতারা কেউ পালায় না। প্রয়োজনে জেলে যাবে, তবুও পালানোর পথ খোঁজে না আওয়ামী লীগ। তাদের (বিএনপি) নেতা মুচলেকা দিয়ে কাপুরুষের মতো পালিয়েছে।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি সম্মেলনটির আয়োজন করেছে।
সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিহিংসা পরায়ণ কারা? প্রতিহিংসা তাদের, যারা ৭১-এর প্রতিশোধ ৭৫ সালে নেয়।
তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাঁধা দেয়া হচ্ছে, হবেও না। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে সরকার পতনের নয়, বিএনপির আন্দোলনের পতন ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী যে বাড়াবাড়ির কথা বলেছেন, তার একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, দণ্ড স্থগিত করে বাসায় রাখা শেখ হাসিনার উদারতা।
সংবিধান দিবস প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ ৫০তম সংবিধান দিবস। আমাদের সংবিধান এতো ভাল যে, সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত সংবিধান। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। সামরিক আমলে আর্টিকেল ৭ কচুকাটা হয়েছে। এরপরও বাংলাদেশের সংবিধান সেরা।
আগামী নির্বাচনও এই সংবিধান অনুযায়ী হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। খেয়াল খুশিমতো সংবিধানকে ব্যবহার করা পৃথিবীর কোথাও চলে না। এখানেও চলবে না।
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. হোসেন মনসুর। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।
সম্মেলনের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন’।
স্বাগত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (ফোরআইআর) মানুষের দৈনন্দিন জীবনে লক্ষণীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ফোরআইআর’কে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশনের মধ্য দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আমরা গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। ২০টি ক্যাটাগরিতে ইতোমধ্যে ৬৬২টি পেপার ও পোস্টার জমা পড়েছে। শুধু বাংলাদেশের গবেষকরা-ই নন- ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, ভারত, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, সিংগাপুর থেকেও গবেষকরা শতাধিক পেপার জমা দিয়েছেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ, অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকমাস্টার ও ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার টেক্সাস আর্লিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের কিউসু বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, চায়না একাডেমি অব সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা।
এছাড়াও বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, ডুয়েট, আইইউটি এবং দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন আইডব্লিউএম, সিইজিআইএস, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদিতে কাজ করছেন এমন গবেষকরাও সম্মেলনে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রথম দিনের সম্মেলনে প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।