আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পর নতুন সরকারপ্রধান নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ (টোরি) পার্টির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন এমপির নামও শোনা যাচ্ছে।
তবে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ এমপিদের সমর্থনের বিচারে বর্তমানে এগিয়ে রয়েছেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বিবিসির এক বিশ্লেষণে জানা গেছে এ তথ্য।
গৃহীত কর ব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে প্রবল বিতর্কের জেরে ২০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নেন লিজ ট্রাস। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করায় ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্পকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম উঠেছে ট্রাসের।
তিনি পদত্যাগ করার পর এই পদে প্রার্থীতা করতে যাচ্ছেন— এমন সম্ভাব্য ৬ জন টোরি এমপির নাম প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এরা হলেন ঋষি সুনাক, পেনি মর্ডান্ট, বরিস জনসন, বেন ওয়ালেস, কেমি ব্যাডেনোচ এবং সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান।
বিবিসির বিশ্লেষণ বলছে, এই ছয় সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে আবার অগ্রসর অবস্থায় রয়েছেন তিন জন— ঋষি সুনাক, বরিস জনসন ও পেনি মর্ডান্ট। বর্তমানে টোরি এমপিদের মধ্যে ৪৫ জন ঋষি সুনাককে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। অন্যদিকে বরিস জনসন ও পেনি মর্ডান্টকে সমর্থন করছেন যথাক্রমে ২৪ জন ও ১৭ জন এমপি।
যুক্তরাজ্যের সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ থাকা অবস্থায় দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি পদত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে পদে আগ্রহী প্রার্থীরা এগিয়ে যাবেন। ক্ষমতাসীন দলের অন্তত দুই জন আইনপ্রণেতার সমর্থন রয়েছে— এমন যে কোনো পার্লামেন্ট সদস্য বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে পারবেন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীদের তারপর যেতে হবে বেশ কয়েক দফা ভোটে। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সের সরকারি দলের আইনপ্রণেতারা গোপন ব্যালটে ভোট দেবেন। সেসব ভোটের ফলাফলের গড় হিসাব করে যে প্রার্থী সবচেয়ে কম ভোট পাবেন, তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রার্থীর সংখ্যা ২ জনে এসে না ঠেকছে ততক্ষণ চলতেই থাকবে এই ভোট।
শীর্ষ দুই প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ার পর তারা সমর্থন চাইবেন পার্লামেন্টের বাইরে সরকারি দলের যত সদস্য রয়েছেন তাদের। যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি সমর্থন লাভ করবেন, তিনিই হবেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মদের পার্টি কেলেঙ্কারি, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিজ দল ও বিরোধী দলীয় এমপিদের অব্যাহত সমালোচনা ও প্রচণ্ড চাপের মুখে গত ৭ জুলাই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বরিস জনসন।
বরিস পদত্যাগ করার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বান প্রক্রিয়ায় চুড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার্টি সদস্যদের ভোটে এগিয়ে যান লিজ। সেই সময়কার প্রতিদ্বন্দ্বী সুনাকের চেয়ে ২১ হাজার ভোটে এগিয়ে জয়ী হয়েছিলেন তিনি।
লিজের পদত্যাগের পর ফের একবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এলো সুনাকের সামনে।