• সারাদেশ

    অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করে জাতিকে স্বস্তি দিয়েছে: স্বপন

      প্রতিনিধি ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৯:৪৭:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, করোনা অতি মহামারিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করে জাতিকে স্বস্তি দিয়েছেন। এমনকি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি সংকট মুদ্রাস্ফীতি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।

    তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের সাথি হতে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বোপরি সাধারণ মানুষের নিত্যজীবনধারা যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।



    বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুক্তিযুদ্ধকালীন বিএলএফের পূর্বাঞ্চলীয় অধিনায়ক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মন্ত্রী জননেতা এমএ মান্নানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নগরের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় বিএনপি-জামায়াতই শুধু দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় না, তথাকথিত সুশীল সমাজও দেশের অগ্রযাত্রা অচল করে দিতে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে ইন্ধন জোগাচ্ছে। আওয়ামী লীগ মাঠ দখলের রাজনীতি করি না। মানুষের মন দখল করবো। দেশের স্বার্থে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। আমাদের রাজনীতি হবে মাঠ গরম করা নয়, জাতি ও সমাজের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখা এবং মানুষের মন জয় করা।



    হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জননেতা এমএ মান্নান অজাতশত্রু শুদ্ধাচারী রাজনীতিক এবং জ্ঞানতাপস। তিনি জ্যোতির্ময় নেতা ও আলোকবর্তিকা। তিনি জনতার এমএ মান্নান। চট্টগ্রামের এমএ মান্নান অবশ্যই একজন জাতীয় নেতা। রাজনীতিকে তিনি জনকল্যাণমুখী ধারায় প্রবহমান রেখেছিলেন বলেই তিনি সবার অন্তর ছুঁয়েছেন। আমি শৈশব থেকেই এমএ মান্নানকে জেনেছি। চট্টগ্রামের কিংবদন্তি রাজনীতিক এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এমএ হান্নান, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কীর্তির কথা সমগ্র দেশবাসী জানে এবং তারা চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শত সংগ্রামের স্মারক এই চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম শুধু রাজনীতির ক্ষেত্রে নয় অর্থনীতি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও দ্যুতি ছড়ায়। তাই চট্টগ্রামের দিকে সারা দেশ তাকিয়ে রয়। এমএ মান্নানের মতো রাজনীতিকের সংখ্যা কমে আসছে। রাজনীতি ব্যক্তির চেয়েও বড় এবং দলের আদর্শের প্রতি আনুগত্য ও জনগণের সেবা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠাই একজন রাজনীতিকের ব্রত। কিন্তু আজ রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। রাজনীতি আবর্জনার জায়গা নয়। ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার নির্ভর নয়। আজকে দেখা যায় বিল বোর্ডে ব্যক্তির বন্দনা এবং বিলবোর্ড নির্ভর এই কদর্য রাজনীতি চাই না।

    সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, প্রয়াত জননেতা এমএ মান্নান অর্থ-বিত্তের জন্য রাজনীতি করেননি। বরং রাজনীতির জন্য অর্থবিত্ত বিসর্জন দিয়েছেন। খুব সাদামাটা জীবন যাপন করে দলের আদর্শিক চেতনায় সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করে গেছেন। তিনি আমাদের রাজনৈতিক শিক্ষক এবং সৃজনশীল রাজনৈতিক কর্মী সৃষ্টির কারিগর।



    চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, জননেতা এমএ মান্নান আপাদমস্তক শুদ্ধাচারী রাজনীতিক। আমৃত্যু তিনি আদর্শকে ধারণ করেছেন। তাঁকে কখনো রাগান্বিত হতে দেখিনি। কেউ যদি তাকে কষ্ট দিতেন কিন্তু তাঁর অভিব্যক্তিতে এর প্রকাশ ছিল না। তাঁর মধ্যে কখনো আমিত্ব ছিল না। একটি সর্বজনীন বোধ ও মানসিকতায় তিনি নিমগ্ন থাকতেন। এমএ মান্নানকে আমরা বাহ্যিকভাবে অতি সাধারণ দেখলেও তিনি গরিব ঘরের ছেলে ছিলেন না, পৈতৃক সূত্রে চট্টগ্রাম শহরে তাদের অনেক অনেক ভূ-সম্পত্তি ছিল। কিন্তু এসব তিনি ভোগ করেননি। রাজনীতির জন্যই বিলিয়ে দিয়েছিলেন। এ কারণে এমএ মান্নান শুধু একজন ব্যক্তি নন একটি প্রতিষ্ঠান।

    তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। এই নির্বাচনের সঙ্গে শুধু দলের নয় সমগ্র দেশ ও জাতির অস্তিত্বের প্রশ্ন রয়েছে। এই বাস্তবতা ও সত্যটি অনুধাবন করে আমাদের জনগণের কাছে গিয়ে সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে হবে এবং আমাদের ঐক্যের শক্তিকে সুসংহত করতে হবে।



    চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উত্তর জেলার সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, আইন সম্পাদক ও জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, এমএ মান্নানের ছেলে আব্দুল লতিফ টিপু, মো. জাবেদ ও সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম প্রমুখ।

    এর আগে সকালে দামপাড়াস্থ কবর প্রাঙ্গণের মসজিদে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

    আরও খবর 4

    Sponsered content